মোঃ মোকাদ্দেস হোসাইন সোহান, রায়গঞ্জ, সিরাজগঞ্জঃ
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী কাচারি ঘর। এ উপজেলায় এক সময় অধিকাংশ সম্ভ্রান্ত পরিবারের অভিজাতের প্রতীক ছিল এই কাচারি ঘর।
বাড়ির বাইরের আঙ্গিনায় অতিথি মুসাফির ছাত্র ও জাগিরদের থাকার ঘরটি কাছারি ঘর বা বাংলা ঘর নামে বেশি পরিচিত ছিল। এ ঘরকে আবার বৈঠক খানাও বলা হতো। যেকোনো মেহমান এলেই থাকতে দেওয়া হতো এই কাচারি ঘরেই। সেই সময়ে মাঝে মধ্যেই শোনা যেতো বাহির থেকে অচেনা কেনো শব্দও। বাড়িতে কেউ আছেন? একটু থাকার যায়গা হবে? আর এ কারণেই বাঙালিরা হয়ে উঠেছিল অতিথি পরায়ণ।
আর এসব অতিথিকে না খেয়ে ঘুমাতে দিতেন না বাড়িওয়ালারা। আর তাছাড়া আসলে মজার ব্যাপার হলো, এসব অতিথি রাতের অন্ধকার থাকতেই উঠে চলে যেতেন। তবে কোনো কিছু চুরি করে নিয়ে যেতেন না। এছাড়াও কাচারি ঘরের বারান্দায় সব সময় একটা হেলনা বেঞ্জ থাকত। এখানে বসে অনেকেই বিশ্রাম নিতেন। বিশেষ করে সকাল-বেলায় চা-আড্ডায় মেতে উঠতেন অনেকেই।
উপজেলার নাড়ুয়া গ্রামের কুরান প্রামাণিকের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, গ্রামপাঙ্গাসী আমার চাচার বাড়িতে একটি কাচারি ঘর ছিল, কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়ায় সেটি এখন আর নেই। ঘরের টিন ও আলমারিগুলো এখনো স্মৃতি হিসেবে রয়ে গেছে। আমার জানা মতে এখন আর কোনো বাড়িতে সেই ঐতিহ্যবাহী কাচারি ঘরগুলো আর নেই। তবে সবার নজর কেড়েছে সম্প্রতি করা দৃষ্টিনন্দন একটি বাড়ি।
বিশেষ করে বারান্দায় অতিথিদের বসার জন্য হেলেনসা ব্রেঞ্জ। এদিকে বর্তমানে অবকাঠামো উন্নতির ফলে মাঠে-ময়দানে যারা কাজ করতেন তারা দিন শেষে নিজ বাড়িতে চলে যান। কোথাও থাকারও প্রয়োজন হয় না।
এছাড়াও, আধুনিকতার ছোঁয়ায় দরকার পড়ে না কাচারি ঘরের। মানুষ এখন কর্মমূখী। তাই বসে থাকার সময় নেই। ফলে উপজেলা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী সেই কাচারি ঘরগুলো।